🇧🇩🤝🇺🇸 বাংলাদেশ-আমেরিকা নতুন বাণিজ্য চুক্তি: শুল্ক কমেছে, বাড়ছে রপ্তানি সম্ভাবনা

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্প্রতি স্বাক্ষরিত নতুন বাণিজ্য চুক্তির মাধ্যমে রপ্তানি ও আমদানি—দুই দিকেই বড় অগ্রগতি ঘটেছে। রেডিমেড গার্মেন্টস (RMG) পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্ক ৩৫% থেকে কমে ২০% হওয়ায় দেশের তৈরি পোশাক শিল্পে এসেছে স্বস্তি। একই সঙ্গে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিভিন্ন পণ্য আমদানির প্রতিশ্রুতি দিয়ে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার করেছে।

­-আমেরিকা নতুন বাণিজ্য চুক্তি নিঃসন্দেহে দেশের অর্থনীতি, রপ্তানি শিল্প এবং বৈদেশিক বাণিজ্যে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এই চুক্তির বাস্তবায়ন যদি সঠিকভাবে হয়, তাহলে আগামী বছরগুলোতে বাংলাদেশের বৈদেশিক রিজার্ভ, কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

📌 চুক্তির মূল বিষয়বস্তু

নতুন এই চুক্তিতে দুই দেশের মধ্যে যেসব বিষয় নির্ধারিত হয়েছে:

RMG পণ্যে শুল্ক হ্রাস: যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পোশাক রপ্তানিতে পূর্বে যেখানে ৩৫% পর্যন্ত শুল্ক দিতে হতো, এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ২০%।

বোয়িং বিমান ক্রয়: বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং কোম্পানি থেকে ২৫টি যাত্রীবাহী বিমান কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

গম ও কৃষিপণ্য আমদানি: আগামী ৫ বছরে প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৭ লাখ টন গম আমদানি করা হবে।

অন্যান্য আমদানিপণ্য: সয়াবিন তেল, এলএনজি, তুলা (cotton) এবং উচ্চপ্রযুক্তি পণ্য আমদানির চুক্তিও হয়েছে।

🧵 তৈরি পোশাক শিল্পে আশার আলো

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮০% যোগান দেয়। যুক্তরাষ্ট্রে এই খাতে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ফলে রপ্তানিকারকরা কয়েক মাস ধরে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছিলেন। নতুন চুক্তিতে ১৫% শুল্ক হ্রাস এই সেক্টরে বড় একটি স্বস্তি এনে দিয়েছে।

BGMEA এবং অন্যান্য শিল্প সংগঠন এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। তারা আশা করছে, এই চুক্তির ফলে নতুন বাজারে প্রবেশ, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং বৈদেশিক মুদ্রা আয় বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি হবে।

🇺🇸 যুক্তরাষ্ট্রের চাহিদা পূরণে বাংলাদেশ

বাংলাদেশ শুধু নিজের রপ্তানি সুবিধা অর্জন করেনি, একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক চাহিদার দিকেও নজর দিয়েছে। চুক্তির অংশ হিসেবে:

বোয়িং বিমান ক্রয়

কৃষিপণ্য, জ্বালানি এবং প্রযুক্তি পণ্যে দীর্ঘমেয়াদি আমদানি চুক্তি

সামরিক সরঞ্জাম ও নজরদারি যন্ত্রপাতি আমদানি (ভবিষ্যতের পরিকল্পনায় রয়েছে)

এই প্রতিশ্রুতি যুক্তরাষ্ট্রকে একটি আস্থার জায়গা দিয়েছে যে, বাংলাদেশ শুধু সুবিধা নেওয়ার নয়, বরং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখতে আগ্রহী।

📊 চুক্তির সম্ভাব্য প্রভাব

বিষয় আগের অবস্থা নতুন অবস্থা

RMG শুল্ক ৩৫%-৩৭% ২০%
বোয়িং বিমান ছিল না ২৫টি অর্ডার
গম আমদানি অনিয়মিত বার্ষিক ৭ লাখ টন
কৃষিপণ্য-তেল-তুলা ইত্যাদি ছিল না নতুন চুক্তি হয়েছে

সমালোচনা ও আলোচনা

যদিও এই চুক্তি অনেক ইতিবাচক সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তবে কিছু সমালোচনাও এসেছে। ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, প্রাইভেট সেক্টরের প্রতিনিধি ছাড়াই এই আলোচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা ব্যবসায়িক বাস্তবতা থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্ন।

তাদের মতে, শিল্প সংশ্লিষ্টদের আরও বেশি সম্পৃক্ত করা হলে চুক্তিটি আরও কার্যকর হতো।

লেখাটি আপনাকে উপকারে এলে শেয়ার করুন এবং আমাদের ওয়েবসাইট TodayDesh.com–এ চোখ রাখুন সর্বশেষ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খবরের জন্য।